এস, এম মাহবুবুর রহমান : বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন জনগণের উন্নয়ন হয়। আর বিএনপি মানেই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। বিএনপি-জামায়াতের কাজই হচ্ছে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা। মানুষ খুন তাদের একমাত্র গুণ। বিএনপি-জামায়াতের এছাড়া আর কোনো গুণ নেই।
তিনি বলেন, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসেছি। সেই থেকে দেশের উন্নয়নে কাজ করে চলেছি। আমার একটাই লক্ষ্য, তা’হলো এদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করা। গণতন্ত্রের ধারা আছে বলেই আজ বাংলাদেশের উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়েছে। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে মোংলা বন্দর বন্ধ করে দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তা চালু করে। এই খুলনার উন্নয়নে আমরা ব্যাপক কাজ করেছি।
তিনি ১৩ নভেম্বর (সোমবার) বেলা সাড়ে ৩টায় খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে আওয়ামীলীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষনে একথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খুলনা মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
প্রধান অতিথির ভাষনে সরকার প্রধান আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াতের কাজই আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা। আগুন দিতে আসলে আপনারাই ওই হাত আগুনে পুড়িয়ে দেবেন। আগুন দিয়ে যারা মানুষ মারে তাদের ছাড় দেয়া হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন এই ২৮ অক্টোবর কীভাবে পুলিশকে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। বেহুঁশ হয়ে গেছে তাও ছাড়েনি। তারপর কুপিয়েছে। ৪৫ জন পুলিশ আহত হয়েছে। সাংবাদিকদেরও ছাড়েনি। সাংবাদিকদের তারা পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। রাজারবাগ পুলিশ স্টেশনে ঢুকে হাসপাতালে আক্রমণ করেছে। কয়েকটা অ্যাম্বুলেন্স ভেঙেছে, পুড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বার বার সরকার গঠন করেছি, আমারতো চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি মানুষের ভাগ্য বদল করতে চাই। বাংলাদেশের জনগণ আমার পরিবার। আপনারাই বারবার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নৌকা স্বাধীনতা দিয়েছে, উন্নয়ন দিয়েছে, ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বে। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আরেকবার সেবা করার সুযোগ দিবেন।
সার্কিট হাউজ মাঠের ঐতিহাসিক এ জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতৃস্পুত্র শেখ হেলাল উদ্দীন এমপি, শেখ সালাউদ্দীন জুয়েল এমপি, শেখ সারহান নাসের তন্ময় এমপি এবং খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
এর প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে দুপুর পৌনে ১টায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে নির্মিত হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন। এরপর দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত সার্কিট হাউজে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন তিনি। বেলা পৌনে ৩ টায় খুলনায় সার্কিট হাউজ মাঠে ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। এ সময় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
এরপর খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত খুলনা বিভাগীয় জনসভায় যোগ দেন শেখ হাসিনা। পাঁচ বছর পর প্রধানমন্ত্রীর এ মহাসমাবেশ ঘিরে খুলনা পরিণত হয় উৎসবের নগরীতে। সমাবেশস্থল ও আশপাশে নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সকাল থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সার্কিট হাউজ মাঠে আসেন আওয়মী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ফেরি, বাস, ট্রেন, ট্রাকে করে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জনসভাস্থলে আসেন তারা। অনেকে আবার নেতাদের দেওয়া টিশার্ট কিংবা শাড়ি পরে আসেন জনসভায়।
বিকেল নাগাদ বিপুল সংখ্যক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী জড়ো হন সার্কিট হাউজ মাঠ এবং আশপাশের এলাকায়। এর আগে ২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনা সার্কিট হাউজ ময়দানের জনসভায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
আরো পড়ুন-
[…] […]