নিজস্ব প্রতিবেদক : খুলনা-৪ আসনে ১১ প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিলেও মাঠে নেই অনেকে। তিন উপজেলার নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন আওয়ামীলীগ মনোনিত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আব্দুস সালাম মূর্শেদী ও কেটলি প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা এবং তাদের কর্মী সমর্থকরা।
ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে প্রচার-প্রচারনা। রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে অনেকের। নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই পরিবর্তন ঘটছে ভোটের হিসাব নিকাশ।
আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী খ্যাতিমান ফুটবলার, খুলনা জেলা আ’লীগের সদস্য শিল্পপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী এমপি এ আসনে ২০১৮ সালে উপ-নির্বাচন ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি নৌকা নিয়ে লড়ছেন। রাজনীতিতে নতুন হলেও সদালাপি ও হাস্যজ্জল মিষ্টভাষি আব্দুস সালাম মূর্শেদীর নানা গুনাবলি সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। নিরহঙ্কার, সৎ ও ভালো মানুষ হিসেবে জুড়ি নেই তার।
এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রয়াত সংসদ সদস্য এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার সহোদর জেলা ছাত্রলীগের একসময়ের সভাপতি ও সুন্দরবন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতিও ছিলেন তিনি।
নির্বাচনী মাঠে প্রচার-প্রচারনায় নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আব্দুস সালাম মূর্শেদী এগিয়ে থাকলেও পিছিয়ে নেই এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা। গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণ, মিছিল, জনসভায় বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এ দুই প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকরা।
মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে দারার মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর উচ্চ আদালত থেকে প্রার্থীতা ফিরে পাওয়ার পর নৌকা ও কেটলির দুই প্রার্থী কর্মী সমর্থকদের নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। আওয়ামীলীগ দলীয় সরকারের অধীনে এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না বৃহৎ দল বিএনপিসহ কয়েকটি দল। একারণে এবার নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে নির্বাচন করছেন আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী।
প্রতিদিন সকাল থেকেই নিজ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন ইউনিয়নে ‘কেটলি’ প্রতীকে ভোট চাচ্ছেন এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা। ভোটারদের উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিতে দেখা যাচ্ছে তাকে। এছাড়াও এই নির্বাচনকে ঘিরে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অন্যান্য দলের আরো ১০ জন। নানা প্রতিশ্রুতির ভান্ডার নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তারাও।
তবে ভোট প্রদানে ভোটারদের মধ্যে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। বিশেষ করে নৌকা ও কেটলি প্রতীকের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা এখন তুঙ্গে। প্রার্থীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রচারণায় উৎসবমুখর পরিবেশ করে রেখেছেন গোটা নির্বাচনী এলাকা। নিজেদের কর্মদক্ষতা আর উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন তারা উভয়ই।
নৌকা প্রতিকের সমর্থক রূপসার নৈহাটী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেন বুলবুল বলেন, আমরা রাজনীতি করি আওয়ামী লীগের। দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছেন তাকে বিজয়ী করার জন্য চেষ্টা করছি।
তাছাড়া আমাদের এখানকার নৌকার প্রার্থী আব্দুস সালাম মূর্শেদী এমপি একজন ভালো মানুষ। এলাকার উন্নয়নে তার ব্যাপক অবদান রয়েছে।
দলের মধ্যে গ্রুপিং সম্পর্কে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ সংগঠন। তাই গ্রুপিং থাকাটা অস্বাভাবিক কিছুনা। তবে যে যাই করুক না কেন, আর যে পথে হাঁটুক না কেন নির্বাচনে ঠিকই নৌকায় ভোট দিয়ে সালাম মূর্শেদীকে নির্বাচিত করবে।
আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আব্দুস সালাম মূর্শেদী এমপি বলেন, দেশের মানুষ এখন নৌকা ছাড়া অন্য কোথাও ভোট দিতে চায় না। প্রধানমন্ত্রী আমাকে নৌকা দিয়েছেন, জনগণ আমার পাশে আছেন। ইনশাআল্লাহ আমিই জয়ী হবো।
কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা বলছেন, এবার প্রধানমন্ত্রী সবার জন্য নির্বাচনের মাঠ উম্মুক্ত করে দিয়েছেন। দলীয় প্রার্থীর বাইরে কেউ চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে পারবে। এ কারণে নির্বাচনকে উৎসবমুখর করতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাঠে নেমেছি। এ আসনে কেটলি মার্কার জোয়ার উঠেছে। জনগন ৭ জানুয়ারি কেটলি প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে জয়ী করবেন আশা করি।
এ আসনে মোট ভোটার রয়েছে ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার ১৮৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৩০৪ জন এবং নারী ভোটার ১ লক্ষ ৭৭ হাজার ৮৭৮ জন ও হিজড়া ১ জন। ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১৩৩ টি, ভোট কক্ষ রয়েছে ৮০৫টি।
Leave a Reply