রাসেল আহমেদ : জেলখানা খেয়াঘাট দিয়ে প্রতিদিন রূপসা, তেরখাদা, দিঘলিয়া উপজেলা গাজীরহাট, তেরখাদা এবং নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার লক্ষ লক্ষ মালামালসহ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভৈরব নদ পারাপার হয়। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদ পারাপারে এসব মানুষগুলোর দুর্ভোগ এবং জীবনের ঝুঁকি রয়েছে।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও জনগুরুত্বপূর্ণ ভৈরব নদের এ স্থানটিতে কোনো সেতু নির্মিত হয়নি। এছাড়া তেরখাদা, রূপসা, দিঘলিয়া উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি জেলখানা খেয়াঘাটে ভৈরব নদের উপর সেতু নির্মাণের। তাদের সে দাবি এবং স্বপ্ন বাস্তুবে রূপ নিক এটাই খুলনাবাসীর প্রত্যাশা।
এদিকে, জেলখানা খেয়াঘাটে ভৈরব নদের উপর সেতু নির্মাণের একটি পরিকল্পণা গ্রহণ করেছিলো খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। জানা গেছে, সম্প্রতি সওজ খুলনা সড়ক বিভাগের আওতায় পরিকল্পনাধীন কাজ সমূহের একটি বিবরণী তৈরি করেছে।
বিবরণীর ১৪নং তালিকায় শ্রীফলতলা-সেনেরবাজার সড়কে ভৈরব নদীর উপর জেলখানা ঘাট সেতু নির্মাণ নামে একটি প্রকল্প তৈরি হয়। জাইকার অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পটির দৈর্ঘ্য হবে ১ হাজার ৩০০ মিটার এবং প্রকল্পটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা।
এছাড়া রূপসা উপজেলার সঙ্গে খুলনা শহরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে জেলখানা খেয়াঘাটের ভৈরব নদীর উপর সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর সড়ক ভবন ঢাকা থেকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর ব্রিজ ম্যানেজমেন্ট উইং এর সেতু নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেল এবং সেতু ডিজাইন সার্কেলের কর্মকর্তারা খুলনার জেলখানা খেয়াঘাট এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছিলেন।
জানা যায়, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো তৈরির ক্ষেত্রে স্ব স্ব এলাকার স্থানীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা পরামর্শ এবং তাদের নির্দেশনা মোতাবেক প্রকল্প গুলো তৈরি করা হয়। এছাড়া দিঘলিয়া, তেরখাদা ও রূপসা উপজেলার (খুলনা-৪ আসন) সঙ্গে খুলনা শহরের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ২০১৪ সালের ৭ জুলাই দিঘলিয়া উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের কৃতি সন্তান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান জেলখানা খেয়াঘাট ভৈরব নদীর উপর, দিঘলিয়ার নগর ঘাট ভৈরব নদীর উপর এবং দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউপির আতাই নদীর উপর তিনটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব সম্বলিত একটি ডিও লেটার তৎকালীন সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে প্রদান করেছিলেন।
ডিও লেটারের অনুলিপি তৎকালীন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও প্রয়াত খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এসএম মোস্তফা রশিদী সুজার কাছেও প্রদান করেছিলেন তিনি।
দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম। সারাদেশে উন্নত যোগাযোগ নেটওয়ার্ক তৈরির লক্ষ্যে সরকার নানাবিধ পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে।
বর্তমান সরকারের ‘রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১’ এর মধ্যেও উন্নত এবং আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের পরিকল্পনা বিদ্যমান রয়েছে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার নেটওয়ার্ক তৈরির ক্ষেত্রে সরকারের এসব পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ দিতে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, গড়বো উন্নত সড়ক নেটওয়ার্ক এই স্লোগানকে সামনে রেখে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) খুলনা জোন খুলনা সড়ক বিভাগের আওতাধীন খুলনাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে একেরপর এক বিভিন্ন ধরণের প্রকল্পের প্রস্তাবনা তৈরি করছে এবং অনুমোদিত প্রকল্পগুলো বাস্তবে রূপ দিতে খুলনা সওজ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আরো পড়ুন-
[…] […]