বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে পর্যটক বাড়াতে পরিবেশবান্ধব আরও চারটি ইকো টুরিজম সেন্টার গড়ে তোলা হচ্ছে। এরই মধ্যে খুলনার সুন্দরবনের বাঘের বাড়িখ্যাত শেখেরটেক ইকোটুরিজম কেন্দ্রটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
আগামী ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রটির উদ্বোধন করবেন। বন বিভাগ বলছে, এতে সুন্দরবন রক্ষার পাশাপাশি আশপাশের জনগোষ্ঠীর আয়ের নতুন পথ খুলবে। পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বনের ভেতরের ৪০০ বছরের পুরানো মন্দির।
পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বনের ভেতরের ৪০০ বছরের পুরানো মন্দীর।জানা যায়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অ্যাডভেঞ্চার, ভয় ও শিহরণের স্থান বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ, কুমিরসহ নানা স্থল ও জলজ প্রাণীর আশ্রয়স্থল এই বন। সুন্দরী, গেওয়া, গোলপাতাসহ নানা ধরনের গাছপালার চমৎকার সমারোহও মুগ্ধ করে সৌন্দর্যপিপাসুদের।
পরিবেশবান্ধব পর্যটন সুবিধা বাড়াতে ও আশপাশের জনগোষ্ঠীর বনের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বিকল্প আয়ের পথ খুলে দিতে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে চারটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। ইকো-টুরিজম কেন্দ্রগুলো হচ্ছে: খুলনা রেঞ্জের শেখেরটেক ও কালাবগী এবং শরণখোলা রেঞ্জের আলীবান্ধা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক।
এরই মধ্যে নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে খুলনার দাকোপের শেখেরটেক ইকো-টুরিজম কেন্দ্রটি। ১৩ নভেম্বর খুলনা থেকে আরও ২২টি প্রকল্পের সঙ্গে এই ইকো-টুরিজম সেন্টারটিরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপরই উন্মুক্ত করে দেয়া হবে পর্যটকদের জন্য।
গহিন সুন্দরবনের ভেতরের এ স্থানটিতে রয়েছে প্রাচীন একটি মন্দির। ঐতিহাসিকদের মতে, মন্দিরটি সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের পুরানো। এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই দেখা মেলে বাঘের পায়ের চিহ্ন। তাই এটি ‘বাঘের বাড়ি’ নামেও পরিচিত। পর্যটকদের জন্য এখানে তিনটি পন্টুন ও গ্যাংওয়ে, তিন কিলোমিটার আরসিসি সড়কসহ ১০টি পথনির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে।
মন্দিরটি মোগল আমলে রাজা প্রতাপাদিত্য নির্মাণ করেছেন বলে ১৯১৪ সালে প্রকাশিত সতীশ চন্দ্র মিত্র তার যশোরের খুলনার ইতিহাস বইতে লিখেছেন। মন্দিরের বাইরের অংশ ৬৫৫ সেন্টিমিটার বর্গাকার। আর ভেতরের অংশ ৩২৫ সেন্টিমিটার বর্গাকার। দেয়ালের পুরুত্ব ১৬৫ সেন্টিমিটার। ভেতরে উত্তর দিকে একটি ছোট কুঠুরি রয়েছে। দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে রয়েছে ৯৭ সেন্টিমিটার চওড়া দুটি প্রবেশপথ।
মন্দিরের ছাদ চারচালা রীতিতে এক গম্বুজবিশিষ্ট। নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে পাতলা ইট। মন্দিরের বাইরের দিকে জ্যামিতিক নকশা, ফুল-লতা-পাতা সংবলিত পোড়ামাটির অলংকৃত ইট ব্যবহার করা হয়েছে। মন্দিরটির দক্ষিণ-পশ্চিম দিক মারাত্মকভাবে ধ্বংস হয়েছে। ভেতরের বিভিন্ন স্থানেও ফাটল ধরেছে। মন্দির তৈরিতে স্থানীয় শামুকের তৈরি চুন ও শিবসা নদীর বালু ব্যবহার করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়।
শেখেরটেক ইকো-টুরিজম কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা স্টেশন মাস্টার আব্দুল হাকিম বলেন, শেখেরটেক ইকো-টুরিজম কেন্দ্রটি এরই মধ্যে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এখানে পর্যটকদের জন্য নানা সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। হেঁটে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য এখানে তিন কিলোমিটার সড়ক তৈরি করা হয়েছে।
বিশ্রাম নেয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে বেঞ্চ। রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। এখানে একটি অনেক পুরানো মন্দির রয়েছে। যেটি পর্যটকদের মুগ্ধ করবে। আগামী ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী এটি উদ্বোধনের পর পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হবে।পরিবেশবান্ধব নতুন এই কেন্দ্রটির মধ্য দিয়ে সুন্দরবনে পর্যটকসংখ্যা বাড়বে বলে আশা ট্যুর অপারেটরদের।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ থেকে জানান হয় সুন্দরবনে নতুন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকসংখ্যা বাড়বে। নানা সুবিধা থাকায় নতুন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকরা আসতে আগ্রহী হবেন। ঢাকা থেকে সকালে রওনা দিয়ে সুন্দরবন ঘুর আবার সন্ধ্যায় ঢাকায় ফেরা যাবে।
আর বন বিভাগ বলছে, এসব ইকো-টুরিজম কেন্দ্র সুন্দরবন রক্ষার পাশাপাশি আশপাশের জনগোষ্ঠীর আয়ের নতুন পথ খুলে দেবে।
সুন্দরবন বিভাগ মূলত সুন্দরবন রক্ষায় পরিবেশবান্ধব ইকো-টুরিজম কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। এতে পর্যটকদের আনাগোনায় সুন্দরবনের পরিবেশের ক্ষতি হবে না। এর পাশাপাশি সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল মানুষের বিকল্প আয়েরও পথ খুলে দেবে।
সুন্দরবনের ভেতরে নতুন চারটি ইকো-টুরিজম সেন্টার নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এ ছাড়া সুন্দরবনে ভ্রমণের জন্য করমজল, হারবাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, দুবলার চর, হিরণ পয়েন্ট ও কলাগাছী সাতটি স্পট নির্ধারিত রয়েছে।
আরো পড়ুন-
[…] […]
Wow, incredible weblog layout! How long have you ever been running a blog for?
you make running a blog glance easy. The overall look of your web
site is wonderful, as well as the content! You can see similar here sklep internetowy