তেরখাদা প্রতিনিধি : বিদেশ গেলে ভাল বেতনের চাকরি মিলবে। রাতারাতি ঘুরবে ভাগ্যের চাকা। এমন প্রলোভনে পড়ে জমি বন্ধক, গৃহপালিত গাভী বিক্রি এবং এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সৌদি আরব গিয়ে প্রতারনা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে তেরখাদা উপজেলার ৪ যুবক।
সেখানে গিয়ে আকামা পেলেও কাজ পাননি তারা। এরা হলেন উপজেলার আদমপুর এলাকার মন্টু মোল্লার পুত্র দ্বীন ইসলাম, সাইফুল মুন্সির পুত্র সাজ্জাদ মুন্সি, আফছু শেখের পুত্র মিঠু শেখ ও রাজ্জাক গাজীর পুত্র সাদ্দাম গাজী। কাজ চাওয়ায় তাদের উপর চালানো হচ্ছে প্রতিনিয়ত নির্যাতন।
একই গ্রামের রেজাল শিকদার প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫লাখ করে টাকা নিয়ে ৩/৪ মাস আগে সৌদি প্রবাসি তার দুই ছেলে কাদের শিকদার ও গোলাম শিকদারের কাছে দেন। এরপরই শুরু হয় তাদের উপর নির্যাতন। এঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে নূর ইসলাম মোল্যা বাদী হয়ে তেরখাদা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরব প্রবাসী উপজেলার আদমপুর এলাকার রিজাল শিকদারের পুত্র কাদের শিকদার ও গোলাম শিকদার গত ৩/৪ মাস আগে সৌদি আরব নেওয়ার উদ্দ্যেশ্যে ভিসা পাঠায়। পরবর্তীতে কাদের শিকদারের পিতা রিজাল শিকদার প্রতি পরিবার থেকে ৫ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নেয়। এরপর ৪ যুবক সৌদি আরব যায়। কথা ছিল সৌদি আরব পৌঁছেই ভালো কাজ পাবেন; পাবেন আকামাও। তবে আকামা দিলেও কাজের কোনো ব্যবস্থাই করেনি দালাল।
এছাড়া তাদরকে কোনো কাজ না দিয়ে নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতনের একপর্যায় গত ২৪ অক্টোবর কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ঘর থেকে বের করে দেয়। সৌদি আরব থেকে ওই ৪ যুবক তাদের পরিবারকে মোবাইল ফোনে জানান এসব তথ্য জানান। এ নিয়ে হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এ খবর জানতে পেরে রিজাল শিকদারের বাড়িতে গেলে তিনি ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ ভয়-ভীতি দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, আদম ব্যাপারীর খপ্পরে পড়ে ৪টি পরিবার এখন দিশেহারা। একই দালালের খপ্পরে পড়ে অন্যান্য এলাকার আরও কয়েকজন বিদেশে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এসব দালালদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বৈধভাবে বিদেশে যেতে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায়ই মানুষকে সচেতন করি।
এ বিষয়ে তেরখাদা থানার ওসি সরদার মোশাররফ হোসেন বলেন, ৪ যুবককে সৌদি পাঠিয়ে তাদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সৌদিতে ৪ যুবককে প্রেরণকারী আদমপুর গ্রামের রেজাল শিকদার বলেন, আমার দুই ছেলের পাঠানো ভিসায় ওই চার যুবকের কাছ থেকে মাথা পিছু ৫লাখ করে টাকা নিয়ে সৌদিতে পাঠাই।
সৌদিতে তারা আকামা ও কাজ সবই পেয়েছে। সেখানে আমার ছেলেদের দ্বারা তারা কোন নির্যাতনের শিকার হয়নি। ওইখানে একই মালিকের লোকজনের সাথে সাথে গোলমাল করেছে বলে আমি জেনেছি।
Leave a Reply