নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে খুলনার গ্রামীণ জনপদে। প্রার্থীদের গণসংযোগ, নির্বাচনী পথসভা ও দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রচার প্রচারনায় প্রতিটি উপজেলার পাড়া-মহল্লায় এই উৎসব বিরাজ করেছে।
প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়া সরকার দলীয় বর্তমান এমপি এবং তার কর্মী-সমর্থক বিগত দিনের এলাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরছেন ভোটারদের কাছে। আবার অন্যান্য প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকরা নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের পাল্লা ভারী করার চেষ্টা করছেন।
এদিকে খুলনার ৬টি আসনের মধ্যে খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা), খুলনা-২ (খুলনা সদর-সোনাডাঙ্গা) এবং খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের মধ্যে তেমন একটা শক্ত প্রার্থী না থাকায় অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত রয়েছেন নৌকার প্রার্থীরা।
এ তিন আসনে চলছে নৌকার গণজোয়ার। তারপরও কোন প্রার্থীর অবস্থানকে ছোট করে দেখছেন না নৌকা প্রতিকের প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকরা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে প্রচার প্রচারনা।
খুলনা-১ আসনে নৌকা নিয়ে লড়ছেন সাবেক সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল। আওয়ামী লীগের ঘাটি হিসেবে চিহ্নিত এ আসনে তিনিসহ ৪জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিলেও নৌকার সাথে শেষ লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রশান্ত কুমারের ঈগল প্রতীকের।
তাতে ভোটের ব্যবধান থাকবে অনেক বেশি বলে ধারণা সাধারণ ভোটারদের। এ আসনের অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন, জাতীয় পার্টির কাজী হাসানুর রশিদ (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির চন্দ্র প্রামাণিক (সোনালী আঁশ)।
খুলনা-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেখ সালাহউদ্দিন এমপি ও খুলনা-৩ আসনে এস এম কামাল হোসেনের নৌকা প্রতিকের প্রচার প্রচারনায় চলছে গণজোয়ার। এ দুই আসনের অন্যান্য প্রার্থীরা নৌকার ধারে-কাছে আসতে পারবেনা বলে মনে করছেন ভোটাররা।
খুলনা-২ আসনে অন্য প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির মো. গাউসুল আজম (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের দেবদাস সরকার (ডাব), সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট) বাবু কুমার রায় (ছড়ি), বিএনএম প্রার্থী মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন (নোঙর) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সাঈদুর রহমান (ঈগল)।
খুলনা-৩ আসনের অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন, জাতীয় পার্টির মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন (লাঙ্গল), জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন (গোলাপ ফুল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাতেমা জামান সাথী (ঈগল)।
খুলনার ৬টি আসনের মধ্যে বাকি তিনটি আসনে নৌকা প্রার্থীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ফলে এ তিনটি আসনে নৌকার প্রার্থীরা রয়েছেন অনেকটা ঝুঁকির মধ্যে।
খুলনা-৪ (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে লড়ছেন তারকা ফুটবলার আব্দুস সালাম মুর্শেদী এমপি। তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বি রয়েছেন কেটলি প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা। তিনি এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার সহোদর ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। প্রচার প্রচারনায় দলের তৃণমূলের অনেকেই ভিড়েছেন দারার পক্ষে।
এ আসনের অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন, জাতীয় পার্টির মো. ফরহাদ আহমেদ (লাঙ্গল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান (আম), তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ কংগ্রেস মনিরা সুলতানা (ডাব), ইসলামী ঐক্যজোটের রিয়াজ উদ্দীন খান (মিনার), বিএনএম প্রার্থী এস এম আজমল হোসেন (নোঙর), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জুয়েল রানা (ট্রাক), স্বতন্ত্র প্রার্থী এমডি এহসানুল হক (সোফা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রেজভী আলম (ঈগল)।
খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে লড়ছেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি। তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেনের ঈগল প্রতিক। শেখ আকরাম হোসেন ফুলতলা উপজেলার জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ছিলেন।
দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে রয়েছে তার গভীর সম্পর্ক। এ কারণে দলের তৃণমূল পর্যায়ের বৃহৎ অংশ তার সাথে ভিড়েছেন। এ আসনে অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পাটির মো. শাহীদ আলম (লাঙল) ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ সেলিম আকতার (হাতুড়ি)।
খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে লড়ছেন মো. রশীদুজ্জামান। তার সাথে শেষ লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিএম মাহবুবুল আলমের ঈগল প্রতীকের। জিএম মাহবুবুল আলম জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। অতীতে কয়রা-পাইকগাছার তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বিপদে-আপদে পাশে থেকেছেন।
যে কারণে দলের তৃণমূলের একটি বড় অংশ তার সাথে যোগ দিয়েছেন। এ আসনের অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম মধু (লাঙ্গল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. আবু সুফিয়ান (আম), বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মির্জা গোলাম আজম (ডাব), বিএনএম প্রার্থী এস এম নেওয়াজ মোরশেদ (নোঙর), তৃণমূল বিএনপির মো. নাদির উদ্দিন খান (সোনালী আঁশ)।
[…] […]