এস, এম মাহবুবুর রহমান : আগামী ১৩ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খুলনার জনসভা ঘিরে মহানগরসহ পার্শবর্তী জেলা উপজেলাগুলিতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুুতি। চারদিকে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি মুখরিত হচ্ছে প্রচার মাইকে।
ইতোমধ্যে খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে শুরু হয়েছে মঞ্চ ও প্যান্ডেল নির্মাণ কাজ। নগরীর রাস্তুাঘাটের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্নে চলছে তোড়জোড়। নগরীর সড়কগুলিতে শোভা পাচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত শতশত তোরণ, প্যানা ও ফেষ্টুন। সরকারের উন্নয়নের চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে এসব প্যানায়। গুরুত্বপুর্ণ স্থাপনা ও বিনোদন কেন্দ্রসহ নগরীর মোড়ে মোড়ে রাতের শোভা বর্ধণে করা হয়েছে আলোকসজ্যা।
দক্ষিণাঞ্চলের সব থেকে অধিক যাত্রী পারাপারের রূপসা ঘাটের পুরাতন পল্টুন মেরামতের পাশাপাশি দু’প্রান্তে নতুন করে আরো দু’টি পল্টুন স্থাপন করা হয়েছে। জনসভা সফল করতে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগসহ পার্শ্ববর্তী জেলা-উপজেলাগুলিতে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রস্তুুতিমূলক সভা অব্যাহত রয়েছে।
২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জনসভার পর ১৩ নভেম্বর তিনি পুনরায় আসছেন একই স্থানে জনসভায় অংশ নিতে। তবে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী খুলনার দিঘলিয়ায় আসলেও সেটি ছিলো তাঁর ব্যক্তিগত সফর।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী খুলনার এই জনসভা দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে অনেকটা গুরুত্ববহন করছে। পাশাপশি দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনাসহ প্রাণচাঞ্চল্যতা।
খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজিত অধিকারী বলেন, দলীয় প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় ব্যাপক লোকসমাগম ঘটাতে মহানগর থেকে জেলাসহ তৃণমুল পর্যায়ে প্রচারপ্রচারণা চালানো হচ্ছে।
সেইসাথে নগরীর প্রবেশদ্বারসমূহ সহ সর্বত্র তোরণ, প্যানা ও ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হচ্ছে। খুলনার রাজনীতির সাথে নেত্রীর রয়েছে নাড়ির সম্পর্ক। সে কারণে ১৩ নভেম্বরের জনসভা ঐতিহাসিক জনসভায় রূপ নেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
১৩ নভেম্বর দুপুর ২টায় খুলনার সার্কিট হাউজ মাঠের জনসভাস্থল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনার ২৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। ইতোমধ্যে প্রকল্পগুলোর তালিকা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন।
খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রেরিত প্রকল্পগুলোর তালিকায় (প্রস্তাবিত) রয়েছে মোট ২২টি প্রকল্প। এর মধ্যে গণপূর্ত বিভাগের রয়েছে ৮টি। সেগুলো হলো- নগরীর সাউথ সেন্ট্রাল রোডে ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ভবন নির্মাণ কাজ, শামসুর রহমান রোডে সিভিল সার্জনের অফিস ভবন ও বাসভবন।
খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন কাজ। খুলনা শিক্ষানবিশি প্রশিক্ষণ দপ্তর সংস্কার ও আধুনিকায়ন কাজ। খুলনায় বিএসটিআই’র ১০তলা আঞ্চলিক অফিস স্থাপন ভবন। বিটাক, খুলনা কেন্দ্রে ১০তলা বিশিষ্ট নারী হোস্টেল ভবন নির্মাণ। পাইকগাছা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ (সিভিল, স্যানিটারি ও বৈদ্যুতিক) কাজ। নগরীর দৌলতপুরে কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের ৪তলা ছাত্র হোস্টেল নির্মাণ কাজ।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- সুন্দরবনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন (ইকোট্যুরিজম) সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত শেখেরটেক ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্প রয়েছে ১০টি। প্রকল্পগুলো হলো- ডুমুরিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫তলা অ্যাকাডেমিক কাম ৪তলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কশপ ভবন নির্মাণ কাজ। বয়রা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খুলনা কলেজিয়েট স্কুল, সরকারি এলবিকে ডিগ্রি মহিলা কলেজ, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, চালনা বাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তালিমুল মিল্লাত রহমাতিয়া ফাজিল মাদরাসা, নজরুল নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং আরআরএফ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে ৬তলা অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ। আড়ংঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪তলা অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকল্প হলো- ডুমুরিয়া উপজেলার চরচরিয়া শিবনগর সড়কে ভদ্রা নদীর ওপর ৩১৫ দশমিক ৩০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজ।
উদ্বোধন প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে- খুলনা সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা উন্নয়ন ও পুনর্বাসন প্রকল্প এবং খুলনা শহরে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় খালিশপুর বিআইডিসি রোডে ড্রেন, ফুটপাত নির্মাণসহ রাস্তা প্রশস্তকরণ ও পুননির্মাণ কাজ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে- নগরীর দৌলতপুরে অতিরিক্ত পরিচালকের ৬তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত অফিস ভবন।
এছাড়া ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনযোগ্য প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে দুটি। তা হলো- খুলনা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মাথাভাঙ্গা এলাকায় স্যানিটারি ল্যান্ডফিল নির্মাণ কাজ। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন দিঘলিয়া টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের ৫তলা অ্যাকাডেমিক কাম ৪তলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কশপ ভবন নির্মাণ কাজ।
[…] নতুন ইউএনও মারুফা বেগম নেলী’র যোগদান প্রধানমন্ত্রীর খুলনার জনসভা ঘিরে ব্য… খুলনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার […]