নিজস্ব প্রতিবেদক : ১০ ডিসেম্বর রবিবার স্বাধীন বাংলার দুই সূর্যসন্তান শহিদ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন ও বীরবিক্রম মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ’র ৫২তম শাহাদাৎ বার্ষিকী। দেশ স্বাধীনের মাত্র ৬ দিন আগে ১৯৭১ সালের এই দিনে খুলনাকে শত্রæমুক্ত করার অঙ্গিকার নিয়ে রণতরী পলাশ, পদ্মা ও গানবোট পানভেল নিয়ে যাত্রাকালে শিপইয়ার্ডের অদুরে বিমানের নিক্ষিপ্ত গোলাবর্ষনে ‘পলাশে’ থাকা স্বাধীন বাংলার এ দুই সূর্যসন্তানসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা শহিদ হন। পরে স্থানীয়রা তাদের মৃতদেহ রূপসা নদীর পূর্ব পাড়ে সমাহিত করে।
১৯৯৭ সালে রূপসার সাংবাদিক সমাজ এ দুই শহিদ বীরের সমাধী মাজারে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে তা বাস্তবায়ন করে। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে রূপসা প্রেসক্লাব ওই দুই বীরের স্মরণে অনুণ্ঠান করে আসছে। প্রতি বছরের ন্যায় রূপসা প্রেসক্লাব এবছরও এ দুই বীরের স্মরণে দুই দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ৯ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও ৮দলীয় ব্যাডমিন্টন টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন। ১০ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় পূর্ব রূপসাস্থ মাজার প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, বেলা ৩টায় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে স্মরণ সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান এবং রাত ১০টায় ব্যাডমিন্টন টুর্ণামেন্টে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ।
৯ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও ৮দলীয় ব্যাডমিন্টন টুর্ণামেন্ট অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী।
বিশেষ অতিথি থাকবেন খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম, দৈনিক আজকের সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ও ক্লাবের প্রধান উপদেষ্ঠা এস এম আবু সাইদ, রূপসা উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দীন বাদশা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোহিনুর জাহান, রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহিন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাফেজ মাওঃ আব্দুল্লাহ যোবায়ের, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা আফরোজ মনা, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যক্ষ ফ. ম আঃ সালাম, সেখ জাহাঙ্গীর হোসেন মুকুল, বীর বিক্রম মহিবুল্লাহর ছেলে ও ট্রাফিক ইন্সপেক্ট (পিটিসি) মোঃ সালাউদ্দীন জুয়েল, ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান বাবুল, আলহাজ ইসহাক সরদার, মোঃ কামাল হোসেন বুলবুল, মোঃ জাহাঙ্গীর শেখ, মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান মিজান, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি ও নৈহাটী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম পলাশ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক শফিকুর রহমান বাবলু, বাবলু কুমার আঁশ, সান প্রিন্টিং প্রেস এর স্বত্ত¡াধীকারী মঈনুল ইসলাম টুটুল।
১০ ডিসেম্বর রাত ১০টায় ৮দলীয় ব্যাডমিন্টন টুর্ণামেন্ট এ বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রূপসা প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা এ্যাড, সুজিত অধিকারী।
বিশেষ অতিথি থাকবেন নিউজ টুয়েন্টিফোর এর নির্বাহী সম্পাদক রাহুল রাহা, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম খালেদীন রশিদী সুকর্ণ, খুলনা জেলা যুবলীগের সভাপতি ও খুলনা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান চৌধুরী মোহাম্মদ রায়হান ফরিদ, খুলনা মহানগর যুবলীগের সভাপতি মোঃ সফিকুর রহমান পলাশ, দৈনিক খুলনা পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন, নিউজ টুয়েন্টিফোর এর খুলনা ব্যুরো প্রধান মুহাঃ সামছুজ্জামান শাহীন, সারাহ সুপার স্টোরের নির্বাহী পরিচালক মোঃ শহিদুল ইসলাম সুমন।
প্রসঙ্গত, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ১৯৩৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার বাঘচাঁপড়া (বর্তমান রুহুল আমিন নগর) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আজহার পাটোয়ারী ও মায়ের নাম জোলেখা খাতুন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়। ১৯৫৩ সালে জুনিয়র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পাকিস্তান নৌবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালের এপ্রিলে ঘাঁটি থেকে পালিয়ে বাড়িতে গিয়ে ছাত্র, যুবক ও সামরিক-আধাসামরিক বাহিনীর লোকদের মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেন। এর কিছুদিন পর ৯ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন তিনি।
অপরদিকে বীরবিক্রম মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ ১৯৪৪ সালের ৩১ আগস্ট চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার শাহেদাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মো. সুজাত আলী ও মায়ের নাম রফিকাতুন্নেছা। তিনি ১৯৬২ সালে নৌবাহিনীতে যোগদান করেন এবং একই সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তার গ্রামের বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। দেশ স্বাধীনের পর রুহুল আমীনকে বীরশ্রেষ্ঠ ও মহিবুল্লাহকে বীরবিক্রম উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
Leave a Reply