নিজস্ব প্রতিবেদক : শতভাগ ভোটগ্রহণের পরও পূর্ব ও পশ্চিম রূপসা ইঞ্জিন চালিত নৌকা মাঝি সংঘের নির্বাচনে বিজয়ীদের বিজয়ের স্বাদ গ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
দু’টি পদের ফলাফলকে কেন্দ্র করে বিচ্ছিন্ন ঘটনায় পুরো নির্বাচন বাতিল করার চক্রান্ত চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরাজিতরা পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি তুলে এসব ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এমনকি তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষ্যে চালাচ্ছে নানা অপপ্রচার।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হারেজ অনুসারীদের হুমকি-ধামকিতে রাস্তায় বের হতে পারছেনা অপরপ্রার্থী ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ ব্যাপারী ও নবনির্বাচিত সভাপতি হালিম শেখসহ তাদের কর্মী সমর্থকরা। এ নিয়ে পূর্ব রূপসা ঘাট ও মাঝিপাড়া এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
১৭ ফেব্রুয়ারী সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পূর্ব রূপসায় উৎসবমূখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় পূর্ব ও পশ্চিম রূপসা ইঞ্জিন চালিত নৌকা মাঝি সংঘের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন। পূর্ব রূপসা রেল মাঠে অস্থায়ী নির্বাচনী কেন্দ্রে এ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বিকেল পৌনে ৪টায় ১৭৬ জন ভোটারের সকলেই তাদের ভোট প্রদান করেন। সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হলেও বিপত্তি ঘটে ফলাফল ঘোষণা নিয়ে।
প্রথম ঘোষনায় সভাপতি পদে মোঃ হালিম শেখ গাভী প্রতীকে পান ৯১ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান সভাপতি মোঃ রেজা মাহমুদ ছাতা প্রতীকে পান ৭৯ ভোট। বাতিল হয় ৫ ভোট। ভোট দিয়ে ব্যালট নিয়ে চলে যাওয়ার পর পুনরায় তা দিতে আসায় বাতিল করা হয় ওই ভোটটি।
সাধারণ সম্পাদক পদে মোঃ হারেজ হাওলাদার আনারস প্রতীকে পান ৮৮ ভোট ও অপরপ্রার্থী বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহাদাৎ হোসেন ব্যাপারী পান ৮৫ ভোট। বাতিল হয় তিন ভোট। এসময় শাহাদাৎ ব্যাপারী চ্যালেঞ্জ করলে পুনঃগণনায় সে পান ৮৭ ভোট ও হারেজ হাওলাদার পান ৮৫ ভোট। লাপাত্তা হয়ে যায় একটি ভোট।
এছাড়া কোষাধ্যক্ষ পদে মোঃ ফজলু মাতুব্বর (দোয়াত কলম) ও নুরুল ইসলাম (তালাচাবি) সমান ভোট পাওয়ায় নির্বাচিত ঘোষণা অমিংসাতি থাকে।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে হারেজ হাওলাদার পরাজিত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে তার সমর্থক ও নারীরা ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে নির্বাচন বাতিল করার দাবি তুলে বিশৃঙ্খলাসহ উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
নির্বাচন কেন্দ্রে প্রবেশ করে তারা ব্যালট ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। একপর্যায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বুলবুল ফলাফল ঘোষনা স্থগিত করেন।
এঘটনার পর থেকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীর লোকজন নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে পূর্ব রূপসা ঘাট ও মাঝিপাড়া এলাকায় মহড়া ও প্রতিপক্ষ প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের হুমকি ধামকি অব্যাহত রেখেছে।
নির্বাচনে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে হরিণ প্রতীকে ৯৪ ভোট পেয়ে মোঃ হায়দার আলী মাতুব্বর, সহ-সভাপতি পদে মটর সাইকেল প্রতীকে ৯০ ভোট পেয়ে মোঃ কামরুল শেখ, সহ সাধারণ সম্পাদক পদে বাই সাইকেল প্রতীকে ৯১ ভোট পেয়ে মোঃ শাহাদাৎ মুন্সি, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে গোলাপ ফুল প্রতীকে ৮৯ ভোট পেয়ে মোঃ ফজর ব্যাপারী, প্রচার সম্পাদক পদে টেক্সি প্রতীকে ৮৯ ভোট পেয়ে মহাব্বত ব্যাপারী, সদস্য পদে মোরগ প্রতীকে ১৪৩ ভোট পেয়ে মোঃ শহিদ মল্লিক, জাহাজ প্রতীকে ৯৪ ভোট পেয়ে মোঃ রুবেল শিকদার ও ঠেলা গাড়ী প্রতীকে ৮৯ ভোট পেয়ে মোঃ আরিফ হাওলাদার নির্বাচিত হন।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব ালন করেন নৈহাটী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেন বুলবুল। সদস্য হিসেবে ছিলেন রূপসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোল্লা আরিফুর রহমান ও নৈহাটী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান মোস্তক।
Leave a Reply