নিজস্ব প্রতিবেদক : তেরখাদায় এক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সদরের ৩৮ নং তেরখাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক সরদার নবীর হোসেনের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার (১৮ জানুয়ারি) বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে ওই বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এহতেশামুল হক কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে মারপিটের এক পর্যায়ে অন্যান্য সহকারী শিক্ষকরা তাকে বাঁচাতে বিদ্যালয়ের বাথরুমে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা আটকে রাখেন। বাথরুমে বসেই তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) ফোনে ঘটনা জানিয়ে তাকে উদ্ধারের আহবান জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে। জানা যায়, তেরখাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বিগত ২০২২ সালে খুলনা জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হিসেবে পুরস্কৃত হয়। এছাড়া শিক্ষক এহতেসামুল হক ২০১৫ সালে খুলনা জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি পান। এদিকে খবর পেয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম স্কুলে হাজির হলেও শিক্ষক সরদার নবীর হোসেনকে পাননি। ঘটনার পর থেকেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। আহত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এহতেশামুল হক পূর্বাঞ্চলকে জানান, স্কুলের মোট শিক্ষক ১০ জন। সহকারি শিক্ষক নবীর হোসেন স্কুলে নিয়মিত উপস্থিত না হওয়ায় সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলায় তাকে লঘু সাজা দেয়া হয়েছে। কিন্তু মামলার ঘটনায় সে আমাকে দায়ি করে নানা সময় দেখে নেয়ার হুমকি দিত। বুধবার শিক্ষকদের কাছে বিদ্যালয়ের যাবতীয় ব্যয়ের হিসাব দিলে নবীর হোসেন আামাকে বলেন আপনি বিদ্যালয়ের টাকা মেরে খান। এক পর্যায়ে সে ফোন দিয়ে লোকজন ডেকে আনে ও আমার ওপর চড়াও হয়। আমাকে লাথি ধাক্কা ও মারপিট করলে স্কুলের শিক্ষকরা আমাকে বাথরুমে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে সিকল আটকে রাখে। আমি তখন বাথরুমে বসেই উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও ওসিকে পুরো ঘটনা জানাই। থানা থেকে পুলিশ ফোর্স এসে আমাকে উদ্ধার করে। এদিকে ঘটনার পর খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে নবীর হোসেন পালিয়ে যায়। আমার কানে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাত লেগেছে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও তেরাদা থানা অফিসার ইনচার্জ বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় তাৎক্ষনিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষক সরদার নবীর হোসেনের মোবাইল ঘটনার পর থেকে বন্ধ রয়েছে। এদিকে জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। তেরখাদা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শারাফাত হোসেন মুক্তি ঘটনার বিষয়ে বলেন, ছাত্র ছাত্রীদের সামনে ক্লাস টাইমে এইধরনের ঘটনা খুবই ন্যাক্কারজনক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি, কালকে (আজ) বিষয়টি নিয়ে বসব।
Leave a Reply