গোলাম মোস্তফাঃ ভোজ্য তেলের আমদানী কমাতে উৎপাদন নিবিড়তা বাড়িয়েছে সরকারের কৃষি বিভাগ।এর ধারাবাহিকতায় রূপসা উপজেলায় ব্যাপকহারে সরিষার চাষ বেড়েছে। এতে বাম্পার ফলন আশা করছেন কৃষক। কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে ২২৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ১৪৮ হেক্টর বেশি। স্থানীয় কৃষকরা জানায়, এ বছর রূপসা উপজেলার এলাকার মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে, ফুলে মৌমাছিরা মধূ আহরণ করছে। কৃষক আশা করছে কোন রোগ বালাই না হলে এবার রূপসায় সরিষার বাম্পার ফলন হবে।
আইচগাতি ইউনিয়নের দূর্জ্জনীমহল গ্রামের কৃষক মোদাচ্ছর ঢালী জানান, এ বছর আমি ২৫ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে প্রতি বিঘা জমিতে ৬ থেকে ৮ মণ হারে সরিষার ফলন হবে। একই গ্রামের ফুয়াদ মোল্লা জানান, আমন ধান কাটতে দেরি হওয়ায় এবার সরিষার আবাদ করতে কিছুটা বিলম্ব হলেও গাছের অনুপাতে সরিষার ফলন ভাল হবে।
শ্রীফলতলা ইউনিয়নের কৃষক জসিম জানান, সরিষার আবাদের পরই জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা যায়। এতে জমিতে সার কম লাগে। সরিষার পাতা ও শিকড় সবুজ সারের কাজ করে এবং বোরো ধানের ফলনও বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। অল্প সময়ের মধ্যে ২টি ফসল ঘরে তুলতে পারছে কৃষক।
তিলক গ্রামের কৃষক শফিকুল তরফদারও জানান, সরিষার চাষে লাভ বেশী খরচ কম। তাছাড়া সহজেই বিক্রয় করা যায়। সরিষার আবাদ ঘরে তোলার পর ওই জমিতেই সার ছাড়াই বোরো ধানের চাষ করা যায়।
শ্রীরামপুর গ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, সরিষার আবাদ এ অঞ্চলের কৃষককে লাভের মুখ দেখাতে পেরেছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজু আহমেদ জানান মাত্র ২ থেকে আড়াই মাসের মধ্যে সরিষা জমি থেকে ঘরে তোলা যায়। সরিষার পাতা ও শিকড় জমিতে জৈব সারের কাজ করে। বর্তমানে বোরো জমিতে সরিষার আবাদ করা হচ্ছে। কৃষক দুই ফসল পেয়ে লাভবান হচ্ছেন। সরিষা চাষে ১ বিঘা জমিতে ২ হাজার থেকে ৩ হাজর টাকা খরচ হয়। ।
রূপসা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ফরিদুজ্জামান বলেন, রূপসায় এবারও বাম্পার সরিষার ফলন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। উপসহকারী কৃষি অফিসারগণ সার্বক্ষণিক মাঠে কৃষকের সাথে কাজ করছেন। যাতে কৃষকের কোন প্রকার সমস্যার সৃষ্টি না হয়। তিনি আরও বলেন ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে দেশীয় সরিষার আবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছে সরকার।
ফলে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, সার ও বীজ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এতে আগামী বছর ফসলটির চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা তারা বলেন এতে করে ভোজ্য তেলের আমদানীও কমবে এবং লাভবান হবে কৃষকরা।
Leave a Reply