নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর পর তেরখাদা উপজেলা আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলনকে ঘিরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য পদে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম আলোচনায় আসছে। তারা হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও জেলা আ’লীগের সিনিয়র নেতাদের সাথে। পদপ্রাপ্তির আশায় চালাচ্ছেন চেষ্টা-তদবির ও নানা কৌশল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা, দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের রাজনৈতিক অভিভাবক শেখ হেলাল উদ্দীন এমপি’র ছবি সম্বলিত প্যানা উপজেলা চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে শোভা পাচ্ছে। তবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে কারো কারো বিরুদ্ধে নিজ দলের কর্মীকে হত্যা, নৌকা প্রতীক নিয়ে অশালীন বক্তব্য, ডিপ-টিউবওয়েল, চাকরি দেয়ার নামে হাজার হাজার লোকের টাকা আত্মসাত, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের চাড়াল বলে কটুক্তি করা সহ বিভিন্ন প্রকার অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিরাও রয়েছেন। এমনকি বিগত সংসদ, জেলা পরিষদ, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সরাসরি নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর বিরোধীতাসহ জামায়াত-বিএনপি’র সাথে গভীর সখ্যতা থাকা ব্যক্তিরাও রয়েছেন। ত্রি-বার্ষিক এ সম্মেলনে যারাই নেতৃত্বে আসবেন তাদের নির্বাচনকালীন পরিস্থিতি সামলাতে হবে। কারণ ২০২৪ সালের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তাই তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্য হতে দাবি উঠেছে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের বিরুদ্ধে যারা রাজপথে সক্রিয় ছিল তাদের আবারও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বির্নিমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী দিনের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে সাংগঠনিকভাবে সংগঠনকে শক্তিশালী করার কাজকে এগিয়ে নিতে পারবে। এদিকে বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককেই পুনরায় দেখতে চান তৃনমূলের নেতা কর্মীরা। তাদের ভাষ্য বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঠিক নেতৃত্বের কারণে তেরখাদা উপজেলা থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ে দল সু-সংগঠিত রয়েছে। এমনকি বিগত ইউপি নির্বাচনে এ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫টি ইউনিয়নেই নৌকা প্রতিকের প্রার্থী বিজয় লাভ করে। এছাড়া জাতীয় সংসদ ও জেলা পরিষদের নির্বাচনেও দলের নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে তারা সাফল্য অর্জন করেছে। সূত্র বলছে, আসন্ন সম্মেলনে সভাপতি পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সভাপতি ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান এফএম অহিদুজ্জামান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম নাম শোনা যাচ্ছে। সাধারণ সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হতে পারেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও বারাসাত ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আলমগীর হোসেন, উপজেলা আ’লীগের সংগঠনিক সম্পাদক, জেলা পরিষদের সদস্য এমডি মফিজ উদ্দীন, উপজেলা আ’লীগের সদস্য বাছিতুল হাবিব প্রিন্সের নাম আলোচনায় রয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, এবারের সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা কম। তবুও ধারাবাহিকতার সম্মেলনে কে হচ্ছেন সভাপতি সাধারণ সম্পাদক এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে আলোচনা সমালোচনা। তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় হাই কমান্ড পর্যন্ত লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা। এ লক্ষ্য ইতোমধ্যে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে আ’লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা আজ ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে। তেরখাদা উপজেলায় সর্বশেষ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে সভাপতি সম্পাদক নির্বাচন করা হয়েছিল ২০১৪ সালে। সে সময় ছয় ইউনিয়নের তৃণমূলের ভোটে সভাপতি এফএম ওয়াহিদুজ্জামান ও কেএম আলমগীর হোসেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। জেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু বলেন, তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যাদের চায় এবং যারা আগে ভালো চালিয়েছেন ভবিষ্যতে চালাতে পারবে তারাই দলের নেতৃত্বে আসবে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এফ এম অহিদুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে দলকে আগলে রাখার চেষ্টা করেছি। আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে বিএনপি-জামায়াত বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছি। বিগত সময়ে সব আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের বর্তমান কমিটির সফলতা রয়েছে।
Leave a Reply