বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নিজ প্রতিষ্ঠানে হামলাসহ বেধড়ক মারপিটের ঘটনায় নির্যাতিত এক নারী রূপসা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে। ২ এপ্রিল বেলা ১২ টায় রূপসা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলার বাগমারা গ্রামের খোকন শেখের কণ্যা বিউটি পার্লার ও টেইলার্স ব্যবসায়ী নির্যাতিত বৈশাখী আক্তার ঝর্ণা (রিমি)।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, জীবন-জীবিকার তাগিদে পূর্ব রূপসা বাজারের মসজিদ মার্কেটে দীর্ঘদিন ধরে টেইলার্স ও বিউটি পার্লারের কাজ করে আসছি। আমার পার্লারে ছোট একটা কাজকে কেন্দ্র করে গত ২৭ মার্চ রাতে কিছু সংখ্যক মহিলা আমার প্রতিষ্ঠানে এসে আতর্কিত হামলা চালায়।
পরে আমি ৯৯৯ এ কল করলে পূর্ব রূপসা বাস স্ট্যান্ড পুলিশ ফাঁিড়র ইনচার্জ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিষয়টি সমাধান করার জন্য অনেক চেষ্টা করে। মুলত হামলাকারী তালিমপুর গ্রামের শারমিন নামের মহিলা গত ২০ মার্চ আমার বিউটি পার্লার থেকে চুল রিবন্ডিং করায়। আমি তার চুল রিবন্ডিং করে বলে দেই তিন দিনের মধ্যে চুল বাধা, চুলে শ্যাম্পু-সাবান ও তেল দেওয়া যাবে না। কিন্তু তিনি নিয়ম না মেনে চুলে তেল সাবান ব্যবহার করে চুল বাধা অবস্থায় আমার কাছে এসে বলে আমার মাথা ব্যাথা করছিল তাই চুলে তেল দিয়ে শ্যাম্পু করেছি।
তারপরও আমি তার চুলে মেডিসিন দিয়ে পুনরায় কাজ করে দেওয়ার কথা বলি। এমন সময় তার সাথে থাকা তার অপর দুই বোন মারমুখি হয়ে আমাকে ও আমার বিউটি পার্লারের কর্মচারীদের উদ্দেশ্য করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং আমি কাজ করা বাবদ যে পারিশ্রমিক নিয়েছি তা ফেরত দাবি করে। এমনকি আমার পার্লারে প্রবেশ করে ভাংচুর করতে থাকে।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আমি ৯৯৯-এ কল করি। কিছুক্ষণের মধ্যে পূর্ব রূপসা বাসস্ট্যান্ড পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আমার পার্লারে এসে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করেন। উনি আমাকে বলেন যাদের কাজ করেছি অর্থাৎ শারমিনকে দুই হাজার টাকা ফিরিয়ে দিতে। আমি সাথে সাথে টাকা ফেরত দিতে গেলে তারা টাকা নিতে অস্বীকার করে চলে যায়।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো জানান রাত ১২টার দিকে আবারও তারা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে আমার বিউটি পার্লারে এসে ঝামেলা করতে থাকে। একপর্যায়ে আমি তাদের চাহিদা মোতাবেক তিন হাজার টাকা ফিরিয়ে দেই। কিন্তু পরদিন ২৯ মার্চ রাত একটার দিকে আমি দোকান বন্ধ করে আমার ছেলে তামিমকে নিয়ে বাড়িতে আসার জন্য রওনা দিয়ে মসজিদ মার্কেটের প্রথম গলিতে পৌঁছালে শারমিন ও সাথীসহ তারা চার বোন এবং ৫/৬ জন যুবক এসে আমার উপর আতর্কিত হামলা চালায়। আমাকে তারা বেধড়ক মারপিট করতে করতে আমার হাতে থাকা ব্যাগ, আমার গলার স্বর্ণের চেইন, হাতের স্বর্ণের আংটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
আমার হাতে থাকা ব্যাগের মধ্যে টেইলার্স, পার্লার ও কাপড়ের দোকানের ৫০হাজার টাকা ক্যাশ ছিলো। তাদের মারপিটে আমি জ্ঞান হারালে আমার পিতা খোকন শেখসহ পরিবারের লোকজন আমাকে দ্রুত খুলনা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে ফেরত দিয়ে দেয়। পরে আমাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে একদিন পর ৩০মার্চ বিকালে ছাড়পত্র নিয়ে রূপসা থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করি। এদিকে আমার উপর হামলাকারী চক্র আমার বিরুদ্ধে পাল্টা মিথ্যা মামলা ও আমার উপর আবারও হামলা করবে বলে ভয়-ভীতি ও হুমকি দিয়ে চলেছে।
এমতাবস্থায় আমি হামলার শিকার হয়েও চরম অসহায় হয়ে পড়েছি। এমনকি নিজের জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ব্যাপারে রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান জানান, দু’পক্ষের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। অতিসত্বর বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।