বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : রূপসা ঘাটে টোলের নামে নৈরাজ্য ও বেপরোয়া চাঁদাবাজীতে নাজেহাল ঘাট পারাপারের সাধারণ মানুষ। পূর্বের টোল দিগুন করে অর্থের বোঝা চাপিয়ে দেয়ার বিষয়টি মানতে নারাজ যাত্রীরা। প্রতিদিন টোল আদায় নিয়ে যাত্রীদের সাথে ঘটছে আদায়কারীদের অসৌজন্যমূলক আচরণ লেগেই আছে। রূপসা ঘাটে টোলের নামে বেপরোয়া চাঁদাবাজী, জুলুম ও জনসাধারণের সাথে দুর্বব্যাবহারের সংবাদ সংগ্রহকালে দৈনিক ভোরের ডাকের খুলনা প্রতিনিধি ও রূপসা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম মাহবুবুর রহমানের সাথে ঘাট ম্যানেজার জাহিদের অসৌজন্যমূলক আচরণ ও হুমকির ঘটনা নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়েছে। ফেসবুকে তার আপলোড করা পোষ্টগুলিতে এ ব্যাপারে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সুশিল সমাজসহ ঘাট ব্যবহারকারী সাধারণ মানুষ। অপরদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘাটের টোল আদায় বাতিল ও ফেরির দাবিতে সর্বস্থরের জনসাধারণ ১৩ এপ্রিল সকাল ১০টায় পূর্ব রূপসা ঘাটে মানববন্ধনের ডাক দিয়েছে।
সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান বলেন, রূপসা ঘাটের টোল আদায়ে নানা অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি গত ২৪ মার্চ দুপুরে পেশাগত দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে টোল কাউন্টারে যান। সেখানে গিয়ে ভিডিও সাক্ষাৎকার নিতে গেলে টোল কাউন্টারের ম্যানেজার রূপসার রামনগর এলাকার বাসিন্দা জনৈক জাহিদ তার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ খারাপ ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে সাংবাদিক মাহবুব ঘাট ইজারাদার আলী আকবর এর সাথে দেখা করে তার সাক্ষাৎকার নিয়ে চলে আসেন। সাক্ষাৎকারটি তিনি ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে ঐদিন তার ফেসবুকে আপলোড করেন। অপরদিকে টোল ঘরের ম্যানেজারের সেই দিনের অসৌজন্যমূলক আচরণের ৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও গতকাল ৯ এপ্রিল দুপুরের দিকে এস এম মাহবুবুর রহমান তার নিজস্ব ফেইসবুক পেজে আপলোড করেন। যা জনসাধারণের ভিতরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।
ভিডিও আপলোডের বিষয়টি জানতে পেরে সন্ধ্যা ৭টা ২১ মিনিটে ঘাট ম্যানেজার জাহিদ ০১৬১২৯৪৫২৫১ নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে সাংবাদিক মাহবুবুর রহমানকে কল করেন। এ সময় জাহিদ ৬ মিনিট ধরে কথা বলে উগ্রতার সাথে বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করেন। ৬ মিনিট কথা বলার পর ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে সাড়ে সাতটার দিকে আবারো কল করে একইভাবে হুমকি স্বরূপ আচরণ করতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক মাহবুব তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
একপর্যায়ে জাহিদ, সাংবাদিক মাহবুবকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন। এমনকি থানার ওসিকে দিয়ে তাকে শায়েস্তা করা হবে বলে হুমকি দেন। হুমকির ঘটনায় সাংবাদিক মাহাবুব বাদী হয়ে বৃহষ্পতিবার রূপসা থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
অপরদিকে ঘাট ম্যনেজার জাহিদ তাকে হুমকি দেওয়ার পর রাত ৮টা ৩৯ মিনিটে সাংবাদিক মাহবুব তার ভেরফিাইড ফেসবুক আইডিতে লেখেন “রূপসা ঘাটের টোল ঘরের ম্যানেজার জাহিদের উগ্র আচরণের ভিডিও প্রকাশ করায় আমাকে এইমাত্র মোবাইলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।” এই লেখা প্রকাশ হওয়ার পর কয়েক ঘন্টার মধ্যে শতাধীক শেয়ার ও কয়েকশ কমেন্টস করে নেটিজেনরা। এর একদিন পার হতে না হতে রূপসা ঘাটকে টোলমুক্ত করার দাবিতে ফুসে ওঠে সাধারণ মানুষ। ফেসবুকে প্রবেশ করলেই একটাই দাবি রূপসা ঘাটকে টোলমুক্ত চাই। একইসাথে সাংবাদিক মাহবুবের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ হুমকিদাতা জাহিদের বিচার দাবি করে পোষ্ট করা হচ্ছে। সাংবাদিক মাহবুবকে হুমকি দেওয়ার ওই পোষ্টে কমেন্টস করে এমডি ইমরান শেখ বলেন, এরাই এতদিন বলছে ওরা অবিচার করতো এখন এরা কি করতেছে ওদের চাই এরা আরো খারাপ আচরণ করতেছে সঠিক বিচার করার জন্য অনুরোধ করতেছি বিচার করা হোক।
নজরুল ইসলাম লিখেছেন, মাইকিং করে বলা হচ্ছে ঘাটের করি কেউ না দিয়ে পার হবেন না,তাহলে এই যে যাত্রীদের জুলুম করে এক টাকার পরিবর্তে দুই টাকা করা হলো অর্থাৎ ১০০% চাঁদা বাড়ানো হলো এ দায় কে নেবে। এমডি হোসাইন লিখেছেন, যেখানে দেশের সকল দ্রব্যমূল্যের দাম কমে গেছে সেইখানে রূপসা ঘাটের টোল ডাবল কিভাবে হয় এইটা কি কোন প্রশাসন দেখেনা ভোক্তা অধিদপ্তর দেখেনা এইটা প্রশাসনিকভাবে দ্রুত দেখা উচিত। এমডি সাদ্দাম হোসেন লিখেছেন, টোল মুক্ত রূপসা ঘাট চাই। আজিজুল রহমান লিখেছেন, রূপসার টোল আদায় বন্ধ করুন একটি মাল হাতে করে আনলে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয় না দিলে দূর ব্যবহার করে। লিটু চৌধুরী লিখেছেন, রূপসা ঘাটের জনবিরোধী এবং জুলুম এর বিরুদ্ধে আপনার কলম সচল থাকবে ইনশাল্লাহ। জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল নিউজ টুয়েন্টিফোর খুলনা ব্যুরো প্রধান সামছুজ্জামান শাহীন লিখেছেন, এর তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি আরো লিখেছেন, নব্য ইজারাদারের লোকজন এক কথায় উগ্র। ঘাট পারাপরের মানুষের সাথে চর দুর্ব্যবহার করে। জেলখানা ঘাট জনসাধারণের জন্য টোল ফ্রি হলে রূপসাঘাট কেন নয়? “টোলমুক্ত রূপসা ঘাট চাই।” সময়ের খবরের মফস্বল ইনচার্জ ও রূপসা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম বাবলু লিখেছেন, এরা বাটপার। সরকারের রাজস্ব ফাকি দিচ্ছে আর পাবলিকের গলা কাটছে।
টোল মুক্ত রূপসা ঘাট সময়ের দাবি। রূপসা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তরুন চক্রবর্তী বিষ্ণু লিখেছেন, দুঃখজনক। তীব্র নিন্দা জানাই। সাংবাদিক জিএম আসাদ লিখেছেন, আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং হুমকিদাতাকে আইনের আওতায় আনা হোক। এসকে আলী আহমেদ লিখেছেন, সময়ের সাহসিকতার পরিচয়ে এবং সত্য ঘটনার সংবাদ জনগনের মাঝে প্রচার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। বাগেরহাটের চুলকাঠী থেকে সাংবাদিক সেকেন্দার মোড়ল লিখেছেন, হুমকিদাতাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।এ ব্যাপারে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এমডি আলমগীর হোসেন লিখেছেন, এর তীব্র নিন্দা জানাই।
হুমকি দাতার বিরুদ্ধ আইনগত ব্যবস্থা নিন। এমডি ওলিউর রহমান তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানা বর্তমান বাংলাদেশ এগুলো কোনভাবেই কামনা আমি মনে করে। সাংবাদিক হোসাইন আহমেদ লিখেছেন, জাহিদ ঘাট ইজারাদারের কর্মচারী, সে হুমকি দেওয়ার পাওয়ার কোথায় পেল, ঘটনার তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবী জানাচ্ছি। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। জাহিদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা দরকার। সাংবাদিক আল মাহমুদ প্রিন্স লিখেছেন, এহেন আচরণের তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসাথে ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিকে অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। মাহদী লিখেছেন, সম্মিলিত ভাবে প্রতিহত করা হোক। অপরাধী যেই হোক, সুষ্ঠু আইনানুগ বিচার চাই। এসএনকে আমিরুল ইসলাম লিখেছেন, ৫ তারিখের পরে অনেকদিন রূপসা ঘাটে কোনও টোল আদায় হয় নাই! সেই ভাবে সারা জীবন চলুক সাধারণ মানুষ তাই চায়! উন্মুক্ত হোক রূপসা ঘাটের টোল!
বাংলা টিভির খুলনা প্রতিনিধি তরিবুল ইসলাম ডালিম লিখেছেন, তার খুটির জোর কোথায় খুজে বের করতে হবে-?? এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তেরখাদার সাংবাদিক রাসেল লিখেছেন, তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই! দ্রুত ওকে আইনের আওতায় আনা হোক! সাংবাদিক এইচ এম রোকন লিখেছেন, তীব্র নিন্দা জানাই। হুমকিদাতা যতই শক্তিশালী দানব হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।দেশটা মগের মুল্লুক হয়ে যায়নি যে কলম সৈনিকদের আন্দর বান্দরে হুমকি দেবে। জসিম উদ্দীণ লিখেছেন, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই, চিন্তা করবেন না আপনার পাশে অনেক লোক আছে, সাথে থাকবো ইনশাআল্লাহ।
গোলাম রব্বানী লিখেছেন, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে যদি প্রশাসন ব্যবস্থা না নে তাহলে আপনার সঙ্গে থেকে আমরা এই হুমকির ব্যবস্থা নিব। এই হুমকির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। জিএম মোক্তারুল ইসলাম, লিখেছেন, আমার বাসা কয়রা উপজেলায়। মাঝে মধ্যে রূপসা যাওয়া আসা হয় কিন্তু ঘাটের মানুষের ব্যবহার খুবই খারাপ। সঠিক বিচার চাই। এমডি বেলাল আহমেদ হাওলাদার লিখেছেন, রূপসা ঘাটে সবসময় জুলুমের স্বীকার হতে হয়, একবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে টোল আদায় বন্ধ করে দিয়েছিল, পরবর্তীতে ঐ দলের মধ্যেই কিছু লোভী মানুষ আবার টোল আদায় শুরু করেন। এখন রূপসা ঘাট রাজনীতির কবলে আটকা পড়েছে। যখন যারা ক্ষমতায় আসবে তারাই ইহার ফসল ভোগ করবে। সাংবাদিক শেখ ফারুক হোসেন লিখেছেন, ফকিরহাট উপজেলা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই একই ধরণের কমেন্টেস আরো বহু থাকলেও সব কমেন্টস উল্লেখ করা সম্ভব হলোনা।