শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের দোসর, বহু মামলার আসামি, শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে বেপরোয়া খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ তুহিনুল ইসলাম তুহিনের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) গুটুদিয়ায় বিক্ষোভ করে মিষ্টি বিতরণ করেছেন চেয়ারম্যানের কাছে নির্যাতিতরা। তারা ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রেতাত্মা তুহিন চেয়ারম্যানের শাস্তির দাবি জানান।
এর আগে ১৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) আদালতে আত্মসর্মপন করে জামিন চাইলে বিজ্ঞ আদালত জামিন না মঞ্জুর করে খুলনা মহানগর শাখা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনার বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের মামলায় চেয়ারম্যান শেখ তুহিনুল ইসলাম তুহিনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চেয়ারম্যান কারাগারে থাকায় ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনার নির্দেশনা চেয়ে ইউপির প্রশাসনিক কর্মকর্তা এমদাদুল হক রোববার (২০ এপ্রিল) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট চিঠি দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের ছাত্র-জনতার বিপরীতমুখী অবস্থানে থাকা গুটুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ তুহিনুল ইসলাম তুহিন সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান। ২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর বিএনপি খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনার বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের মামলার ৪৬ নম্বর আসামী তিনি।
তার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর আন্তজার্তিক অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে ছাত্রদল কর্মী রকিবুল হাসানকে হত্যার অভিযোগে তার পিতা রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার ১৫৬ নম্বর আসামী তিনি। বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হোসেন মোল্লা হত্যা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামী তুহিন। এসব মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে অর্ন্তবর্তীকালিন জামিনে ছিলেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ১৭ এপ্রিল আদালতে আত্মসর্মপন করে জামিন চাইলে বিজ্ঞ আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কারাগারে থাকায় ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ এমদাদুল হক গত রোববার (২০ এপ্রিল) ২০২৫/১১(২৮) নম্বর স্মারকে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর চিঠি লিখেছেন। ওই চিঠিতে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনার নির্দেশনা চাওযা হয়েছে। এছাড়া ইতোপূর্বে নির্বাচিত তিনজন প্যানেল চেয়ারম্যানের নামও উল্লেখ করেছেন ওই পত্রে।
এলাকাবাসীর দাবি প্যানেল চেয়ারম্যানরা চেয়ারম্যান তুহিনের আজ্ঞাবহ। তারা যদি দায়িত্ব পায় তবে অদৃশ্যভাবে তুহিনের হাতেই থেকে যাবে ক্ষমতা। তাই গুটুদিয়া ইউনিয়নে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিন বলেন, গুটুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান করাগারে বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হবে। এক্ষেত্রে যদি প্যানেল চেয়ারম্যানদের নিয়ে কোন আপত্তি না থাকে তবে তাদের মধ্য থেকে দায়িত্ব দেয়া হবে। এতে জটিলতা হলে বিকল্প ব্যবস্হা নেয়া হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রিয় সহ-সম্বনয়ক ও খুলনা জেলার সদস্য সচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, শুধু গুটুদিয়ার চেয়ারম্যান নয়, খুলনায় বিভিন্ন উপজেলার প্রায় ৪০টা
ইউনিয়নে এখনও পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর ও খুনী-সন্ত্রাসীরা চেয়ারম্যান হিসাবে বসে আছেন। আমরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট ইউএনওদের বারবার এবিষয়ে সতর্ক করেছি। তারা আমাদের কথা শুনছে না। তারা এলাকার মানুষের কথায় কোনোরূপ কর্নপাত করছেন না। জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট ইউএনওদের অভ্যুত্থানের চেতনাবিরোধী এরূপ কার্যক্রমে আমরা চরমভাবে উদ্বিগ্ন।