শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ১১:১৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : রূপসা কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে ফ্যাসিস সরকারের চিহ্নিত এক দোসরের নাম প্রস্তাব করায় স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ, অভিভাবক মহল ও সাধারণ মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনতিবিলম্বে ওই কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
গেল বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর রূপসা কলেজের ম্যানেজিং কমিটি বাতিল করা হয়। গঠন করা হয় ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি। পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে রয়েছেন যথাক্রমে সভাপতি মোঃ খাইরুল ইসলাম, সদস্য সচিব ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ শহিদুল্লাহ, দাতা সদস্য মোঃ মহিউদ্দিন শেখ, বিদ্যোৎসাহী সদস্য মৈয়ত্রী সরকার ও শিক্ষক প্রতিনিধি উদ্ধব চন্দ্র পাল। এই ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মধ্যে অদৃশ্য শক্তি বলে খুলনা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মৈয়ত্রী সরকার অন্তর্ভুক্ত হয়। জানিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করতে থাকে। এদিকে গত ১৯ মার্চ আহবায়ক কমিটির সভায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সভাপতি পদে তিনজনের নামের প্রস্তাবনা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠানো হয়। তবে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট আহবায় কমিটির মধ্যে দাতা সদস্য মোঃ মহিউদ্দিন শেখকে কখনো কোন নোটিশ প্রদান বা কোন মাধ্যমে জানানো হয়নি এই সভার কথা। ফলে তার অনুপস্থিতিতে পাঁচজনের তিনজনকে নিয়ে গোপনীয়ভাবে মিটিং করে এই কমিটি পাঠানো হয়। এরা হলেন মৈয়ত্রী সরকার, সুস্মিতা দাস গুপ্তা ও দেব প্রসাদ টিকাদার। এই তিনজনের একজনের বাড়িও রূপসায় এলাকায় নয। বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেলে গত ২৮ এপ্রিল দাতা সদস্য মোঃ মহিউদ্দিন শেখ, নৈহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোল্লা সাইফুর রহমানসহ স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ এবং অভিভাবক মহল ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে যান। এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন কিছু জানেন না বলে জানিয়ে দেন। এমনকি ম্যানেজিং কমিটি গঠন করতে হলে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার বিধান থাকলেও তার কোন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অথচ বিজ্ঞাপন ও সংবাদপত্র ব্যয় হিসেবে ৫৭১০ টাকা উল্লেখ রয়েছে।
এব্যাপারে মোঃ মহিউদ্দিন শেখ বলেন, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমাদের তিন বিঘা জমি দেওয়া রয়েছে। এখনো ৭কাটা জমি রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানে। অথচ এখানে যে মিটিং হয়েছে এর একটি মিটিং এর ব্যাপারেও আমাকে জানানো হয়নি। তিনি বলেন এখানে কোন ফ্যাসিসের জায়গা হবেনা। যে কমিটি পাঠানো হয়েছে তা বাতিল পূর্বক নতুন কমিটি গঠন করতে হবে।
রূপসা উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা সাইফুর রহমান বলেন, সভাপতি হিসেবে যে তিনজনের নাম পাঠানো হয়েছে তারা কেউ এই এলাকার বাসিন্দা নয়। এমনকি তাদের অনেকে রয়েছে ফ্যাসিবাদ সরকারের দোসর। এই এলাকার মানুষের অর্থ ও শ্রম দিয়ে গড়া এই প্রতিষ্ঠান। এখানে দায়িত্বশীল জায়গায় এখানকার মানুষদের আসতে হবে। বহিরাগত বা ফ্যাসিবাদদের কোনো ঠাঁই হবে না। তিনি এই কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানান।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ শহিদুল্লাহ বলেন, কমিটিতে যাদের দেওয়া হয়েছে তাদের অনেককেই আমি চিনিনা। এডহক কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক নামগুলো পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে বিতর্ক থাকলে পুনরায় মিটিং করে নতুন কমিটি দেওয়া যেতে পারে।
এদিকে স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ ফ্যাসিবাদ মুক্ত কমিটি গঠনের জন্য বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।